কেমন ছিল খন্দকার মোশতাকের ৮৩ দিনের শাসনামল | How was the regime of Khondaker Mostaq Ahmad |
খন্দকার মোশতাক আহমেদ: শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতায় এসে তিরাশি দিনের শাসনামলে যা যা করেছিলেন
খন্দকার মোশতাক আহমেদ ছিলেন শেখ মুজিবের মন্ত্রিসভার বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ই অগাস্টের ভোরে সপরিবারে হত্যার পর ওই দিনই রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব নেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ।
রাষ্ট্রপতি হিসাবে তিনি ক্ষমতায় ছিলেন মাত্র ৮৩ দিন। তেসরা নভেম্বর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালে শেখ মুজিব সরকারের অনেক কিছু পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ।
গবেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, ''আসলে তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল, খুনীচক্র তাকে বসিয়েছিল। আমার মনে হয়, তিনি অনেকটা শিখণ্ডির মতোই ছিলেন। তারপরেও যেহেতু তার নেতৃত্বে সরকারটি হয়েছিল এবং সরকারের সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের, তারা ১৫ই অগাস্টের আগের ও পরের অনেক কিছুই পাল্টে দিয়েছিলেন।''
মি. আহমেদ উদাহরণ হিসাবে বলেন, ''১৫ই অগাস্টের আগ পর্যন্ত বাকশাল ব্যবস্থা ছিল। একটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বাকশালের একদলীয় ব্যবস্থা রদ করেন।
গ্রেপ্তার অভিযান
২৩শে অগাস্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান, এম মনসুর আলী, আবদুস সামাদ আজাদসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে যারা তাকে সমর্থন করতে এবং তার মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে অস্বীকার করেন, তাঁদের বন্দী করেন।''
মেজর জেনারেল (অবঃ) মইনুল হোসেন চৌধুরী 'এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য, স্বাধীনতার প্রথম দশক' বইতে লিখেছেন, ''ক্ষমতায় এসেই এই সরকার তাড়াহুড়ো করে সামরিক বাহিনীতে পরিবর্তন আনে। জেনারেল ওসমানীকে (এমএজি ওসমানী) একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির সামরিক উপদেষ্টা করা হলো। উপ-সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করা হলো। আর পূর্বতন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল শফিউল্লাহকে অব্যাহতি দিয়ে তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলো রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগের জন্য।''
''মেজর রশিদ, ফারুক এবং তাদেরই সহযোগীদের হাবভাব ও চালচলন দেখে মনে হতো, দেশ এবং সেনাবাহিনী তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে।
ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই হত্যাকারী সেনা কর্মকর্তা এবং নতুন সরকারের সদস্যদের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ ছিল রক্ষীবাহিনী।
সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা এম এ জি ওসমানী রক্ষীবাহিনীর কর্মকর্তাদের ডেকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।
জয় বাংলার বদলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ
স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই বাংলাদেশের জয় বাংলা অনেকটা জাতীয় শ্লোগান হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। স্বাধীনতার পরে এই শ্লোগানই ব্যবহৃত হতো। কিন্তু খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়েই তার প্রথম বক্তব্যে 'জয় বাংলা'র বদলে 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' বলতে শুরু করেন।
পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রেডিও পাকিস্তানের অনুকরণে 'রেডিও বাংলাদেশ' নাম নির্ধারণ করেন।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ বা বিচার যাতে না করা যায়, সেই দায়মুক্তি দিয়ে ২৬শে সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন।
পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বাংলাদেশের সংসদে সেই অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়। ফলে সেটি একটি আনুষ্ঠানিক আইন হিসাবে অনুমোদিত হয়।
জেল হত্যা
তেসরা নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী অবস্থায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। সেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের নির্দেশে।
Khondaker Mostaq Ahmad was a Bangladeshi politician. He was the President of Bangladesh from 15 August to 6 November 1975, after the assassination of Sheikh Mujibur Rahman. He was part of the conspiracy that brought about the assassination of Sheikh Mujibur Rahman on 15 August 1975. He took on the role of president.
Ahmad immediately took control of the government, proclaiming himself President. All three services chiefs were dismissed and replaced by next in line seniors. Major General Ziaur Rahman was appointed Chief of Army Staff of the Bangladesh Army, replacing K M Shafiullah. Air Vice Marshal A. K. Khandekar was replaced by AVM M G Ghulam Tawab. Mushhtaq reportedly praised the plotters who killed Sheikh Mujibur Rahman calling them Shurjo Shontan (sons of the sun). Mushtaq Ahmad also ordered the imprisonment of leaders Syed Nazrul Islam, Tajuddin Ahmad, A. H. M. Qamaruzzaman and Muhammad Mansur Ali. He replaced the national slogan of Joy Bangla with Bangladesh Zindabad slogan and changed the name Bangladesh Betar to 'Radio Bangladesh'. He proclaimed the Indemnity Ordinance, which granted immunity from prosecution to the assassins of Mujib. Mujib's daughters Sheikh Hasina Wazed and Sheikh Rehana were barred from returning to Bangladesh from abroad. BAKSAL and pro-Mujib political groups were dissolved.
On 3 November, in what became infamously known as the "Jail Killing Day", the four imprisoned leaders Tajuddin Ahmad, Syed Nazrul Islam, A. H. M. Qamaruzzaman, and Muhammad Mansur Ali, who had refused to co-operate with Mostaq,were killed.
বঙ্গবন্ধুর খুনী খন্দকার মোশতাক আহমেদের উত্থান-পতন | Khondaker Mostaq Ahmad | খন্দকার মোশতাক আহমেদের দৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কেমন ছিল |