বাংলাদেশের পোশাক কেন্দ্রিক ধার্মিকতার ব্যাপারে কিছু বলা। এখানে পোশাকের ধর্মটা খুব প্রকট। এবং এই মুলুকে টুপি-পাঞ্জাবীকে সুন্নতি পোশাক মনে করার মত এক হাস্যকর ধারণা প্রচলিত আছে। এখানে একটা মানুষকে মূল্যায়ণ করা হয় কেবল তার পোশাক এবং বাহ্যিক লুক দিয়ে। সে কতটুকু ঈমানদার তার পরিমাপ ও হয় কেবল পাঞ্জাবির সাইজ দিয়ে।
সেদিন বিশ্ব খ্যাত ইসলামিক স্কলার তুরষ্কের প্রফেসর মেহমেদ গরমেজের একটা অনুবাদ মিম্বার গ্রুপে পোস্ট করা হলে সেখানের কমেন্ট সেকশন দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। লোকজন কমেন্ট করছে- ইসলামিক স্কলার কিন্তু দাড়ি নাই, হা হা, যার নিজের শরীরে ইসলাম নাই, সে কিসের ইসলাম শিখাবে ব্লা ব্লা। অক্সফোর্ডের ইসলামিক স্কলার তারিক রামাদানের ব্যাপারেও এদেশীয়দের সেম অভিমত, বাহ্যিক লুক দেখে বিচার করা হয়। সাইয়েদ কুতুব শহীদ ও ইকবালদের সৃষ্টি অন্যান্য চিন্তা ও দর্শনকে মোকাবিলা করার জন্য মোল্লাদের অন্যতম হাতিয়ার এবং এদের বিকল্প নেই বলে তাদের ব্যাপারে এরা খানিক চুপ থাকেন।
আবার ইসলামিক নারী স্কলাররা বহির্বিশ্বে নিয়মিত পুরুষ শ্রোতাদের সামনে লেকচার দিচ্ছেন চেহারা খোলা রেখেই। তাদের সামনে অন্য পুরুষ ইসলামিক স্কলাররাও উপস্থিত থেকে লেকচার শুনে থাকেন। এদেশে এমনটা হলে ঐ নারীকে যথাসম্ভব নেগেটিভ ভাবে উপস্থাপন করা হতো। হিজবুত তাহরীরের একটা মেয়েকে দেখি মাঝে মাঝে ইসলামিক টপিকগুলো নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা টেনে থাকেন। তার আলোচনার ব্যাপারে কথা বলার চাইতে কমেন্ট সেকশনে তার ব্যাপারে নেগেটিভ আলোচনা বেশি করা হয়। তাকে বেশ্যা পর্যন্ত বলা হয়ে থাকে কথিত ধার্মিকদের মুখ দিয়েই।
সাধারণ নারীদের চেহারা খোলা রাখা নিয়েও কোরআন কোন বাধ্যকতা দেয়না। কেবল বুকে চাদর রাখা ছাড়া স্পেশাল কোনো শর্ত নেই কোরআনে। এই শালীনতা ঠিক থাকলে একটা নারীর থ্রিপিস, কোর্ট স্যুটেও কোন আপত্তি নেই ইসলামের। বহির্বিশ্বের নারী ইসলামিক স্কলাররা কোর্ট-স্যুটও পরিধান করে থাকেন। তবে বেশিরভাগ স্কলার নারীসুলভ পোশাক এবং মুখ খোলা রাখা হিজাব পরিধান করেন। খুব কম স্কলার আছেন যে বোরকা পরিধান করে থাকেন। আর এই বোরকা পরিধান কোরআনের শর্তও না। কিন্তু ঠিক সে রকম চলাফেরা করলেও নিকাব না বাঁধার কারণে একটা মানুষের ঈমানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় আমাদের দেশে। তাকে খারাপ বানিয়ে দেয়া হয় বোরকা পরিধান করা নারীটির তুলনায়।
ব্যাপারগুলো কেন হয় তা দেখতে গিয়ে আমি পেলাম - লিবাসুত তাকওয়া বা "তাকওয়ার পোশাক" কোরআনের এ ধারণার ব্যাখ্যা। যার ব্যাখ্যায় কতিপয় ধর্মীয় মোল্লারা বলেন- তাকওয়ার পোশাক এমন একটি পোশাক 'যে পোশাক পরিধান করলে আল্লাহভীতি বৃদ্ধি পায়। কি আজব ব্যাখ্যা!
...
মুসলমানদের জুব্বার কাপড় কয়গজ হবে, টুপি কেমন হবে এসব রাসুল বলেননি কারন তিনি কোন দর্জি ছিলেন না। বরং কাপড় পরিধানের ক্ষেত্রে যেসব দৃষ্টিকটু সেগুলোই মুসলমানদের জন্য নিষেধ করেছেন মাত্র। তৎকালীন সময়ে আরবের ধর্ম গোত্র নির্বিশেষে সকলেই পাগড়ী পরিধান করত, পাগড়ীকে বলা হত আরবের মুকুট। সুতরাং পাগড়ী, জুব্বা, টুপি এগুলো সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত নয় এগুলো ছিল আরব দেশের কালচার মাত্র। যেহেতু রাসুলুল্লাহ (স:) জুব্বা, পাগড়ী, টুপি এ পোশাক গুলোর প্রবর্তন করেননি বরং এগুলো যুগ যুগ ধরেই ছিল, যদি নবী (স:) এ পোশাক গুলো মুসলমানদের জন্য আলাদাভাবে আবিষ্কার করতেন তবেই এটাকে সুন্নত বলা যেত, অতএব এগুলো আরব দেশের সংস্কৃতি।
মুসলমানদের জন্য এমন কাপড় পরিধান করতে হবে যাতে সতর ঢাকে, শালীন কাপড় ব্যবহার করতে হবে যা একেবারে পাতলা কিংবা টাইট হতে পারবে না যাতে শরীর কিংবা শরীরের পেশি স্পষ্ট হয়।
দাড়ি রাখার বিষয়ে কিছু কথা:
দাড়ি রাখা ফরজ কিংবা ওয়াজিব নয়। দাড়ি রাখার ব্যাপারে কোরআন এ সরাসরি কোন নির্দেশ নাই। রাসুলকে অনুসরন এর ব্যাপারে যে আয়াতগুলো আছে তা দিয়ে দাড়ি রাখার বিধান ফরজ অথবা ওয়াজিব প্রমাণ করা যাবে না, কেননা শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধানাবলী পরোক্ষ নয় বরং প্রত্যক্ষভাবে শারিঈ কতৃক ঘোষিত হয়ে থাকে। অতএব দাড়ি রাখা ফরজ তো নয়ই এমনকি ওয়াজিবও নয়।
তাহলে দাড়ি রাখা কি সুন্নত?
অতএব বুঝা যায় তৎকালীন সময়ে আরবের কাফের মুশরিক ও অন্যান্য বিধর্মীরা ও দাড়ি রাখত। খ্রীস্টান পাদ্রীদের দাড়ি অনেক লম্বা ছিল কিন্তু ইহুদিরা দাড়ি ছোট রাখত এবং গোফ বড় রাখত, রাসুল (স:) তাদের এ কুরুচীপূর্ণ স্বভাবের বিরোধিতা করেন।
আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষের ধারনা হল যে দাড়ি রাখা ফরজ বা ওয়াজিব। তাবলিগ জামাত, সালাফিপন্থী সহ আমাদের দেশের সকল মাদ্রাসার আলেমদের মতে দাড়ি রাখা ফরজ এবং দাড়ি না রাখলে সে ফাসেক কখনও সে কাফের অথবা কখনও দাড়ি না রাখলে সে বেদ্বীন হয়ে যায়।
এখন আমরা দেখবো সে দাড়ির ব্যপারে ইসলাম কি বলে?
দাড়ির ব্যপারে কুরআন এবং হাদিসে কি আছে আগে দেখে নেইঃ
দাড়ি রাখার ব্যপারে কুরআনে কোন আয়াত নেই।
অতএব বলা যায়, জুব্বা, টুপি, পাগড়ী এগুলো রাসুলের নির্ধারিত কোন সুন্নত নয় বরং আরবীয় কালচার। আর দাড়ি রাখাটা সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত নয় তবে ফেতরাতের অন্তর্ভুক্ত বটে। দাড়ি রাখাও কোন নির্দিষ্ট সুন্নত নয় আর কোরআন মাজিদেও দাড়ি রাখার ব্যাপারে স্পষ্ট কোন নির্দেশ নেই।
📖 রিলিজিয়াস মাইন্ডসেট বিশ্বাসের ঢেঁকি গেলা
✒️ সজল রোশন
💰 504 টাকা
🛒 অর্ডার লিঙ্কঃ
https://www.durbiin.com/book/religiou...
অর্ডার করতে কল করুন -01773366266, 09643007007, 01307452110
#hijabfashion #nikab #dress #tupi #islamicdress #lifestyle #beard #arabic #durbiin #books #islamicpost #islamicvideo #sajal #religious #mindset #nobi #hadis #Quran#Allah
______Contact with us______
Website
https://www.durbiin.com
Facebook
/ durbiin.com.bd
YouTube
/ durbiinofficial